করোনায় ড্রেক্সামেথাসনের ব্যবহার ও সর্তকতা

0
825

ডি কে সৈকত: কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসায় প্রথমবারের মতো জীবনরক্ষাকারী ওষুধ খুঁজে পাওয়ার দাবী জানিয়েছেন একদল ব্রিটিশ বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানীরা বেশ নির্ভরতার সহিত দাবী করেছেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত মুমূর্ষু রুগীদের জীবন রক্ষায় সহায়তা করবে স্বল্পমূল্যের সহজলভ্য ওষুধ ড্রেক্সামেথাসন। করোনা রুগীদের চিকিৎসায় স্বল্পমাত্রায় এই ওষুধের ব্যবহার কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা ড্রেক্সামেথাসন প্রয়োগে দেখেছেন ভেন্টিলেটর ব্যবহারকৃত রুগীদের তিন ভাগের এক ভাগ এবং অক্সিজেন ব্যবহারকৃত রুগীদের পাঁচ ভাগের এক ভাগের মৃত্যুঝুঁকি অনেকাংশে কমায়। ড্রেক্সামেথাসন এই সহজলভ্য ওষুধটি যদি করোনা মহামারী প্রাদুর্ভাবের প্রথমদিকে প্রয়োগ করা হতো তবে মৃত্যুঝুঁকি কমে অনেক জীবন বাঁচতো। সহজলভ্য ও স্বল্পমূল্যের হওয়ায় করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত গরীব দেশগুলো এই ওষুধটি ব্যবহার করে আশানুরূপ অধিক ফল পেতে পারে। বিশ্বের প্রসিদ্ধ ও নামকরা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক করোনায় আক্রান্ত রুগীদের উপর ড্রেক্সামেথাসনের ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করেন। হাসপাতালে ভর্তি থাকা দুই হাজার রুগীর উপর তারা ওষুধটি প্রয়োগ করেন, পরবর্তীতে এই ওষুধটি প্রয়োগ করা হয় নি এমন চার হাজার রুগীর সাথে তুলনা করে সিদ্ধান্ত নেন। গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক পিটার হর্বি বলেন, করোনায় মৃত্যুহার কমাতে ড্রেক্সামেথাসন কার্যকরী ও একমাত্র ওষুধ। এটির ব্যবহারে বিজ্ঞানীদল অভাবনীয় সফলতা পেয়েছেন। ড্রেক্সামেথাসন নিয়ে গবেষণা চালানো দলের নেতৃত্ব দেওয়া অধ্যাপক মার্টিন ল্যান্ড্রেই বলেন, আর বিন্দুমাত্র বিলম্ব না করে প্রতিটি হাসপাতালের চিকিৎসকদের এই ওষুধ ব্যবহার করা খুব জরুরি। ডেক্সামেথাসন ব্যবহারে অধিক সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে কেননা ড্রেক্সামেথাসন এন্টিবায়োটিক বা ভিটামিন না, এটা স্টেরয়েড। স্টেরয়েড হচ্ছে লাইফ সেভিং ড্রাগস, তাই না বুঝে সাধারণ জনগণ এই ওষুধটি ব্যবহার থেকে বিরত থাকবার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানী সহ অভিজ্ঞ ডাক্তারগণ। তারা বারবার বলেছেন এই ওষুধটি শুধু হাসপাতালে ভর্তি সংকটাপন্ন রুগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য। ড্রেক্সামেথাসন মৃদু উপসর্গযুক্ত রুগীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগের পরিনাম অত্যন্ত ভয়াবহ। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ প্রয়োগ সম্পূর্ণ নিষেধ। ড্রেক্সামেথাসন সমস্ত শরীরে মারাত্মক সাইড-ইফেক্ট করতে সক্ষম, বিশেষকরে মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে আপনার জীবন মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। সুতরাং সাধারণ জনগণকে এই ওষুধ ব্যবহার ও মজুদ না করতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণের পরামর্শ। বাংলাদেশে ড্রেক্সামেথাসন ওষুধের উৎপাদন এবং মজুদ পর্যাপ্ত পরিমান আছে, তাই রুগীদের বিভ্রান্ত হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here