একটি শিশুর জন্ম এক নিভৃত পল্লিতে,
সেদিন কেউ জানত না,
এই শিশুটিই বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবেন,
এই শিশুটিই জাতির পিতা হবেন,
বাঙালির ভাগ্যবিধাতা হবেন,
বঙ্গবন্ধু হবেন,
সোনার বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা হবেন,
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হবেন,
বিশ্বনন্দিত রাষ্ট্রনায়ক হবেন।
ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ,
জেলজুলুম থেকে ষড়যন্ত্রের শিকার,
নির্যাতন আর অত্যাচারে জর্জরিত বাঙালির মুক্তির জন্য,
এই শিশুটি একদিন হয়ে ওঠেন মহান নেতা- বিশ্বনেতা।
সহস্র বছর ধরে বাংলার ভাগ্যাকাশ অন্ধকারময় ছিল,
বাঙালি পরাধীন ছিল,
শোষণে-নির্যাতনে স্তব্ধ ছিল বাঙালির অধিকার,
বাঙালির ইপ্সিত বাসনা লুকায়িত ছিল,
সেই সুপ্ত বাসনা জাগিয়ে তোলেন বাঙালির হৃদয়ে,
বাঙালিরা আর পরাধীন থাকবে না,
শুধু একটি কথা-স্বাধীনতা, স্বাধীনতা, স্বাধীনতা।
তারপর মহান নেতার নেতৃত্বে জেগে ওঠে বাঙালি।
মনে পড়ে আজো সেই ৭ মার্চের অগ্নিঝরা ভাষণ,
কর্ণকূহরে আজো ভেসে ওঠে সেই বজ্রকণ্ঠের সুর,
মানবধমনীতে আজো বইছে সেই ভাষণের বিচ্ছূরণ,
শুধু বাংলায় নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাষণ,
সেদিন মানুষেরা অপেক্ষা ছিল চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে,
তাই হলো;
স্বাধীনতার ঘোষণায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ল শত্রুর বিরুদ্ধে।
‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখরিত রণাঙ্গন,
প্রেরণা শুধু বঙ্গবন্ধু – বঙ্গবন্ধুর ভাষণ;
বাঙালির মুক্তির জন্য,
বাঙালির স্বাধীনতার জন্য,
বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য,
বঙ্গবন্ধুর আজীবনের সংগ্রাম বাস্তবে রূপ দিতে,
আপামর জনতা নেমে পড়ল মুক্তিযুদ্ধে;
অবশেষে স্বাধীন হলো বাংলাদেশ- বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।
আমি বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি, মুজিবকে দেখেছি,
মুজিবের ভাষণ শুনেছি,
মুজিবের আন্দোলন- সংগ্রাম দেখেছি,
বাঙালির মুক্তির জন্য মুজিব নিজেকে উৎসর্গ করেছেন,
জেল খেটেছেন,
নির্যাতন-অত্যাচারে জর্জরিত ছিলেন;
তা-ও দেখেছি।
আমি দেখেছি মুজিবের নেতৃত্ব- বলিষ্ঠ নেতৃত্ব,
কালজয়ী মহানায়ক হিসেবে দেখেছি,
শুধু তাঁর অঙ্গুলি হেলনে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে,
এমন এক বিশ্বনেতা দেখে আমি জীবন সার্থক করেছি।
আমাকে ফিরিয়ে দাও মুজিবকে,
আমি আর একবার মুক্তিযুদ্ধে যাব মুজিবের নেতৃত্বে;
স্বাধীন হব আর একবার,
অন্যায়-অবিচার- দুর্নীতি মুছে দেবো সমাজ থেকে,
আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে তুলব,
মুজিবের সোনার বাংলা গড়ব।
মুজিব, তুমি তো বলেছিলে তোমার বাঙালি মানুষ হয়েছে,
এ কথা সত্যি
তুমি বেঁচে থাকলে আজ আমরা মানুষের মতো মানুষ হতাম,
এই বাংলা উন্নত হতো,
আধুনিক বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়াত,
তারপরও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি,
শুধু তোমার আশির্বাদ নিয়ে।
কে বলেছে বঙ্গবন্ধু নাই?
বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ আছে,
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আছে,
একটি স্বাধীন – সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইতিহাস আছে,
একটি মানচিত্র আছে,
তিরিশ লাখ শহিদের রক্তের দাগ এখনো শুকায় নাই।
বঙ্গবন্ধু, আজ তোমার জন্মশতবার্ষিকী,
তুমি আজ আমাদের মাঝে নাই,
তাতে কী হয়েছে?
আমরা, তোমার সৈনিকেরা আছি,
আমরা অঙ্গীকার করছি,
যতদিন তোমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হবে,
যতদিন বাংলার মানুষ সত্যিকারের মানুষ না হবে,
ততদিন আমাদের সংগ্রাম চলবে;
আজ শততম জন্মবার্ষিকীতে তোমার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি – জয় বাংলা।
মোঃ আবুল বাশার হাওলাদার
সভাপতি
বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন,
কেন্দ্রিয় সভাপতি