কবি শাহীন চৌধুরী ডলি
দিনমান মুখ ভার করে রাখা আকাশটা যেন রংচটা জিন্স
দমকা হাওয়ার তালে দুলছে রাতের আড়ষ্ট প্রহর
মুহুর্মুহু বজ্রপাতে নারকোলের চিরল পাতার ফাঁক গলে
বিজলি ঝলক আছড়ে পড়ছে বিষন্ন উঠোন বাড়ির বালুচরে
খরস্রোতা অতীতে ঢেউ তুলছে বাদলের মাদল সাজ।
কতবার রিমঝিম বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আমরা যুগলে
কলকল ছলছল উচ্ছল আবেগে রামধনু সাতরং মেখেছি,
ফজর থেকে রাত্রির শেষ প্রহর তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত
হাঁটায়, কর্মে, প্রার্থনায়, ঘুমে সর্বত্র না থেকেও ছুঁয়ে থাকা
তুমি করপুটে তুলে দিয়েছিলে নির্ভরতার লোবান।
কুয়োতলায় চাপা পড়েছে উনিশ বছরের বিভ্রম
পেরিয়ে গেছে আরো দুটো জোড় বছর
হঠাৎ এদিক সেদিকে অভাবিত দেখা হয়ে গেলে
মামুলী কথার মাদুলি নাড়তে চাড়তে
অযাচিত কয়েক চরণ বেরিয়ে আসে মুখ ফসকে।
অভিমানে নাকি রাগে ঠিক ঠাহর করতে পারি না
ফর্সা মুখে রক্তাভা দেখা দেয়, চোয়াল দুটো শক্ত করে
চোখ দুটোতে রাজ্যের প্রশ্নবাণ ছুঁড়তে থাকো,
অধিকার হারালে পরহস্তগত সম্পদ নিজের হয় না
দুমুখো বেঁকে যাওয়া পথে নতুন গল্পকথার অবকাশ বিলুপ্ত।
আঁধার কেটে মেঘের বুকে আলোর বাণ ডেকেছে
আকাশে রুপোর থালার মতো বৌদ্ধ পূর্ণিমার চাঁদ
কড়ইয়ের পাতাগুলো জোড়ায় জোড়ায় সিজদাহ রত
পেঁজাতুলো জোছনায় রাতের আড়ষ্টতা কেটে
মৃদুমন্দ বাতাসে দোল খাচ্ছে শিশু আমের দল।
এককাপ ধূমায়িত তুলসি চায়ে চুমুক দিতেই দেখি
কাঠঠোকরা পাখিটা বয়সী গাছের খোঁড়লে চষ্ণু ডুবিয়ে
তুলে আনছে পোকামাকড়ের ঘরবসতি।
মনের চিলেকোঠায় বিচ্ছুরিত বিষাক্ত স্মৃতির ঝাঁপে
ঢাকনার ছিপিবন্ধে নতুন অর্কের প্রতীক্ষায় সময় মাপি।