কে এ বিপ্লবঃ ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৩ জন পুরুষ ৬ জন নারী ও ৩ জন শিশু রয়েছে। নিখোঁজ অন্যদের উদ্ধারের এখনও অভিযান অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও কোস্ট গার্ড সদস্যরাসহ সরকারের অন্যান্য বাহিনী সদস্যবৃন্দ। ঘটনার ১৩ ঘণ্টা পরে সুমন ব্যাপারি নামে একজনকে জীবিত উদ্ধার করে মিটপোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার সকালে রাজধানীর সদরঘাটের শ্যামবাজার পয়েন্টে ময়ূর-২ নামের লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় মর্নিং বার্ড নামের একটি লঞ্চ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও কোস্ট গার্ড। তাদের সঙ্গে উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছেন স্থানীয়রাও।
জানা গেছে, সকাল পৌনে ৮টার দিকে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে মুন্সিগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। পথে বুড়িগঙ্গা নদীর শ্যামবাজার পয়েন্টে ময়ূর-২ নামের লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ডুবে যায় সেটি।
কেরানীগঞ্জের একটি ডকইয়ার্ড থেকে মেরামত শেষে ময়ূর-২ নদীতে নামানোর সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে ডুবে যাওয়া লঞ্চটি থেকে কয়েকজন যাত্রী সাঁতরে পাড়ে উঠলেও অন্যরা জলে তলিয়ে যান। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর যুগ্ম পরিচালক (বন্দর) এ.কে.এম আরিফ উদ্দিন জানান, আজ সকাল ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা মর্নিং বার্ড লঞ্চটি সদরঘাটে বার্দিং করার আগ মুহূর্তে চাঁদপুরগামী ময়ূর-২ লঞ্চটি ধাক্কা দেয়। এতে সঙ্গে সঙ্গে তুলনামূলক ছোট মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যায়। এ সময় লঞ্চটিতে কমপক্ষে ৫০-এর অধিক যাত্রী ছিলেন। কিছু সংখ্যক যাত্রী নদীর তীরে সাতরিয়ে উঠে। শেষ পর্যন্ত কত জন সাতরিয়ে তীরে উঠছে এবং কত জন নিখোঁজ আছে এ রির্পোট লিখা পর্যন্ত আর কিছু জানা যায় নি। ঘটনার ১৩ ঘণ্টা পরে সুমন ব্যাপারি নামে একজনকে জীবিত উদ্ধার করে মিটপোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে উদ্ধার কাজে আসা লঞ্চ প্রত্যয় জাহাজটি পোস্তগোলা ব্রিজের কারণে এখনও দূর্ঘটনা কবলিত স্থানে আসতে পারেনি। উদ্ধার কাজে সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর রাখছেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। দূর্ঘটনা তদন্তে সাত সদস্য কমিটি গঠন করা হয়েছে পাশাপাশি ময়ূর-২ লঞ্চ এর মালিক এবং মাস্টারসহ তিনজনের নামে মামলা করেছে নৌ-পুলিশ। এই দূর্ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করেছেন নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
নিহতদের পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা করে দাফনের ব্যবস্হা করছেন বিআইডব্লিউটিএ এবং ঢাকা জেলা প্রশাসন। এছাড়া নিহতের পরিবারকে দেড় লক্ষ্য টাকা ক্ষতি পুরণ দিবে ঘোষণা করেছ বিআইডব্লিউটিএ । হতাহতের ঘটনায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী গভীর শোক প্রকাশ করছেন ও তার শোক সন্তপ্ত পরিবার পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।