শামসুল আরেফিন খান
শ্রদ্ধাভাজন তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার কৃতি সন্তান মঈনুল হোসেন উচ্চ মাধ্যমিকে আমার সহপাঠী ছিল ঢাকা কলেজে, ১৯৫৬-৫৭ সেশনে।৫৮ ব্যাচে এইচএসসি পাশকরা একসাথে।তার কেতাদুরস্ত চালচলন ও আচরণ ছিল রাজপুত্রের মত।একটা কালো মরিস গাড়িতে যাতায়াত করতো।আরও অনেকের বাপের গাড়ি ছিল। কিন্তু অন্য কেউ গাড়ি চড়ে কলেজে আসতো না। সেটা যে কোন অপরাধ ছিল তা না। তাছাড়া আমি যে ঈর্ষা করে কথা বলছি তাও না।এটা তার স্বভাব চরিত্র বুঝাবার জন্যে বলা।মুখ বন্ধ করে কমনরুমে টেবিল টেনিস খেলা এবং রুটিন মাফিক ক্লাস সেরে গাড়ি চড়ে বাড়ি ফেরা। কাউকে সে মানুষ বলেই গন্য করতো কিনা সন্দেহ।আমি দলবাজি করতাম। আমার সঙ্গেই বরংকিছুটা বাৎচিত ছিল। এই গণবিচ্ছিন্ন চরিত্রই তার বৈশিষ্ঠ। নারী বিদ্বেষ ও দরিদ্র মানুষের প্রতি ঘৃণাও যে তার সহজাত সেটাও উত্তরকালে তার আচরণ থেকেই প্রকাশ পেয়েছে।এতদসত্বেও প্রয়াত মানিক মিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা বশতঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদে নিয়ে আসলেন।মুক্তিযুদ্ধের ধারে কাছেও সে কখনও ছিল না।তাছাড়া সোহরাওয়ার্দী তনয়া বেগম আখতার সোলায়মান প্রকাশ্যে ৬ দফা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করায় মঈনুল বাঙালির স্বাধীন হওয়ার চিন্তাকেই সমর্থন করেনি।
১২ জুন, ১৯৭১ ~সোহরাওয়ার্দী কন্যা বেগম আখতার সোলায়মান আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে ফাটল ধরানোর জন্য তৎপর হয়ে উঠেন। কিছু আওয়ামী লীগারকে নিয়ে আলাদা দল গঠনেরও উদ্যোগ নেন। তিনি রেডিও ভাষণে গভর্নর জেনারেল টিক্কা খানের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার সুযোগ গ্রহণ করতে ভারতে আশ্রয় নেয়া এমএনএ, এমপিএ-দের নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে “ভারতের দুরভিসন্ধি” নস্যাৎ করতে প্রশাসনকে সাহায্য করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। শরণার্থীদেরও তিনি একই আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাদের পুনর্বাসনের সকল প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেয়া হবে। তিনি বলেন, অনেক এমএনএ ও এমপিএ তার সাথে দেখা করেছেন এবং আরও এমএনএ ও এমপিএ-দের সাথে তিনি দেখা করতে চান। তিনি তার সেই ভাষণে এমএনএ ও এমপিএ-দেরকে নিজ এলাকায় জনগণের মধ্যে পাকিস্তানের আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা স্থাপনের আহ্বান জানিয়ে উল্লেখ করেন, “টিক্কা খান দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সঠিক ব্যবস্থা নিয়েছেন”।মইনুল হোসেন হচ্ছে তারই সার্থক প্রতিনিধি।
২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ সে-ই প্রথম বিশ্বাসঘাতকতা করলো এবং প্রকাশ্যে জাতির জনকের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার স্পর্ধা দেখালো , জে.ওসমানিকে সাথে নিয়ে।আর এক বিশ্বাসঘাতক মিজানুর রহমান চৌধুরি তার বইতে লিখেছেন, নূরে আলম সিদ্দিকী মাথা তুলে বিরোধিতা করলেও শেষ পর্যন্ত ৪র্থ সংশোধনীর পক্ষ্যে ভোট না দিয়ে পারেনি।নিজের ভুমিকার কথা বলতে যেয়ে তিনি লিখেছেন যে বঙ্গবন্ধু তাঁকে আব্দুর রব সেরনিয়াবত ও দেওয়ান ফরিদ গাজীর মাঝখানে বসিয়ে রেখে ছিলেন এমনভাবে যে তিনি আর কথা বলার কোন সুযোগ পাননি। তবে তিনি বাকশালের ঘোর বিরোধী ছিলেন।এটা তিনি গর্ব করে বলেছেন। আওয়ামি লীগের সাংসদদের মধ্যে আরও অনেক বিশ্বাসঘাতক ছিল।“ঠোটের কোনে হাসি দেখ অন্তরেতে বিষ, এমন মানুষ পৃথিবীতে দেখবে অহর্ণিশ”। কিন্তু কেউ মুখ ফুটে কোন কথা বলেনি।
খন্দকার মুশতাক ও ধনকুবের জহিরুল কাইয়ুম এমএনএ, ক্ষমতাধর হেনরি কিসিঞ্জারের পদলেহন করে জুন ৭১ মুক্তিযুদ্ধের পিঠে ছুরি মেরে পাকিস্তানের সাথে ৬-দফা ভিত্তিক কনফেডারেশন গঠনের সব রকম ব্যবস্থাই সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু সৈয়দ নজরুল ইসলাম , তাজুদ্দিন আহমদ , কামরুজ্জামান, মনসুর আলী তা ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম হন মওলানা ভাসানী- মনি সিং- মনোরঞ্জন ধরের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদের সহায়তায় ।পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও সোভিয়েত রাশিয়া।
৬ জুন, ১৯৭১ ~গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আটক সকল গণপ্রতিনিধির অবিলম্বে মুক্তিদান করতে হবে। বাংলাদেশের মাটি থেকে পাকিস্তানি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে হবে। বিগত আড়াই মাসে হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের যে ক্ষতি করেছে – একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে তা নির্ণয় করে লুণ্ঠিত সম্পদ ফেরত দিতে হবে। ও তার পূর্ণ ক্ষতিপূরণ করতে হবে। এসব দাবি পূরণের মাধ্যমেই কেবল রাজনৈতিক সমাধান আসতে পারে।”সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, “পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের কাছে অস্তিত্বহীন বিস্মৃত এক ইতিহাস মাত্র”।
ব্যারিস্টার মঈনুলই ছিল কিসিঞ্জার-ইয়াহিয়ার দোসর খন্দকার মুশতাক-জহুরুল কাইয়ুম গং এর মুখপত্র। সে আগেই পাগলি বাসন্তির বিবস্ত্র জাল পরা ছবি মানিক মিয়ার সাধনায় গড়া দৈনিক ইত্তেফাকে ছেপে বঙ্গবন্ধুকে বেইজ্জত করেছিল।একটা কৃত্রিম দুর্ভিক্ষের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছিল। জাতির আর একটা বড় দুর্ভাগ্য এটা যে বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া দলের কেউ ৪র্থ সংশোধনীর সমর্থনে এখনও কোন কথা বলেনা। তাদের নীরবতা মঈনুল ব্যারিস্টার ও তার পৃষ্ঠপোষক অপশক্তিকে সাহসী করে তুলছে।
সম্প্রতি মঈনুরল ব্যারিস্টার খুবই ধৃষ্টতার সাথে বলেছে, “মুজিব চাচাকে তো আমি খুবই ভালো বাসতাম। কিন্তু যখন দেখলাম যে কম্যুনিস্টরা তাকে হাইজ্যাক করেছে, তখনই আমাকে দাড়াতে হ’ল তার বিরুদ্ধে”। তার এই ধৃষ্ট উক্তি জাতির জনককে ভয়ানকভাবে খাটো করেছে। বঙ্গবন্ধু কী এতই অধম ছিলেন যে তাকে প্রভাবিত করে বা চোখ বেঁধে ভুল পথে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল ? আওয়ামি ঘরাণার কোন বুদ্ধিজীবী তার এই ঘৃণ্য মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করেনি।এটাও খুবই দুঃখজনক।সে যতই তুচ্ছ হোক, তার এসব মিথ্যাচার প্রজন্মকে ভুল বার্তা দিচ্ছে। এ কথাটা বিবেচনায় নেয়া দরকার।
বঙ্গবন্ধু সমাজ বদলের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সে কী তার অপরাধ?১৩ বছর ৪ মাস ১৫ দিন বঙ্গবন্ধু জেলে ছিলেন।
সেই নির্জন তপস্যায় তিনি বোধি লাভ করেছিলেন। তাঁর নতুন জীবনবোধ গড়ে উঠেছিল। তৈরি হয়েছিল তাঁর নতুন জীবনদর্শণ। বঙ্গবন্ধু জেলে ছিলেন ১৯৪৮ সালে ৪ মাস।১৯৪৯ সালে ৯ মাস। ১৯৫০ সালে ১২ মাস । ১৯৫১ সালে ১২ মাস। ১৯৫২ সালে ২ মাস। এই সময়টাতে ভাষা সংগ্রামের পাশাপাশি সারা পূর্ব বঙ্গে তুমুল কৃষক আন্দোলন হয়েছিল।
১৮জানুয়ারি ১৯৪৯ , সিলেটের এক উচ্চবিত্ত অভিজাত পরিবারের সুখী গৃহিনী, শ্রীমতি অর্পণা রায় চৌধুরির নেতৃত্বে রক্তাক্ত নানকর বিদ্রোহের দাবানলের মধ্য দিয়ে নতুনভাবে কৃষক আন্দোলনের শুরু। সেই চাপে পূর্ব বঙ্গ বিধান সভায় বহু গড়িমসি খাওয়া ইবিএসটিএ (ইস্ট বেঙ্গল স্টেট টেনান্সি এক্ট) বিল পাশ হ’ল। জমিদারি প্রথা রদ হ’ল। নানকর কৃষক পেটের ভাত ও একটু আশ্রয়ের বিনিময়ে বৌবেটিসহ ধনী জমিদারের ২৪ ঘন্টার হুকুমের দাশ ছিল । চাওয়ামাত্র যে কোন সময় প্রভুদের বিছানায় যাওয়া সেই দাশ মেয়েদের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল। এদেরই নানকর কৃষক পরিচিতি ছিল। নান মানে রুটি। নানকর কৃষক সেই বর্বর ভূস্বামীদের দাসত্ব থেকে মুক্তি পেলো। পুলিশের পাশবিক নির্যাতনে অর্পণা রায় চৌধুরির গর্ভপাত ঘটে।দারুণ অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে জেল হাসপাতালে নেয়া হয়। রাজবন্দী শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিবাদী হন। কারা নির্যাতীত বরেণ্য কৃষক নেতাদের সাথে তাঁর নিবিড় সান্নিধ্য ঘটে। শেখ মুজিবুর রহমান তখন থেকেই কৃষকমুক্তির কথা ভাবতে শুরু করেন।
১৯৫০ সালে রাজশাহীর নাচোলে হ’ল রক্তস্নাত সাওতাল কৃষক বিদ্রোহ। মিলিটারি দিয়ে মুসলিম লীগ সরকার দমন করলো মরিয়া কৃষকের সেই মরণপন সংগ্রাম। সেই যুদ্ধের
অবিসম্বাদিত নেতা জমিদার গিন্নী রাণীমা ইলামিত্র পুলিশ হেফাজতে বিভৎস পাশবিক নির্যাতনের শিকার হলেন। তিনি রাজশাহী জেল হাসপাতালে ছিলেন। অভিভূত রাজবন্দী শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর শয্যাপাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, “দিদি তোমার এই ত্যাগ বৃথা যাবেনা”। মহান ভাষা আন্দোলন ও রক্তঝরাণো কৃষক মুক্তি সংগ্রাম এক মোহনায় মিলিত হয়ে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নেতৃত্বে ব্যালট বিপ্লব সফল করলো । যুক্তফ্রন্ট সরকার ইলা মিত্রকে মুক্তি দিলো। মন্ত্রী মুজিব চিকিৎসার জন্যে ইলামিত্রের কলকাতা যাওয়ার ব্যবস্থা করলেন।
১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে তালাবন্দী সেলে পুলিশের গুলিবর্ষণে কম্পরাম সহ ৮ কৃষক নেতা নিহত হন। তাদের মরদেহের শিয়রে দাড়িয়ে রাজবন্দী শেখ মুজিবুর রহমান অঙ্গীকার করেছিলেন,“আমাদের দল ক্ষমতায় আসলে কৃষকের তেভাগা দাবি পূরণ করবে”।বঙ্গবন্ধু ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫তাঁর সেই অঙ্গীকার পূরণের জন্যই ৪র্থ সংশোধনী পাশ করে কৃষক-শ্রমিক আওয়ামি লীগ গঠন করলেন।মঈনুল -মুশতাক-ওসমানি চক্রের গায়ে তাতেই ফোসকা পড়লো।
বাসন্তির ছবি ১৯৭৪ সালে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষসৃষ্টির জন্য বিশেষ প্রেক্ষিত রচনা করেছিল। ৯১ সালের শেষের দিকে শেখ হাসিনা বাসন্তিকে দেখতে গিয়েছিলেন। চিলমারির সেই গ্রামে সেই ভাঙা ঘরে তখনও মানসিক ভারসাম্যহীন বাসন্তির দুরাবস্থা অপরিবর্তিত ছিল। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষ্যে শেখ হাসিনা প্রমান পেয়েছিলেন সেই মিথ্যা বানোয়াট কাহিনীর ।যার রূপকার ছিল তৎকালীণ ইত্তেফাক সম্পাদক মঈনুল হোসেন। চিলমারির মানুষ শেখ হাসিনাকে বলেছিল, আপা তখন একটা মাছধরা জালের দাম শাড়ির দামের চাইতে অনেক বেশি ছিল। শেখ হাসিনা তাৎক্ষনিক কিছু আর্থিক সহায়তা দেন বাসন্তিকে। ৯৬ সালে ক্ষমতায় যেয়ে তিনি বাসন্তির জন্যে ঘর বানিয়ে দিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন সমাজ বদলের।কিন্তু বিদেশ থেকে সমাজতন্ত্র আমদানি করতে চাননি।দেশের মাটি মানুষের আবেগ ও চিন্তা চেতনার সাথে খাপ খাইয়ে ধীরে ধীরে শোষণহীণ সমাজ গড়তে চেয়েছিলেন। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনাও পিতার অধরা স্বপ্ন নিয়েই দেশে ফিরেছিলেন। আমার বিশ্বাস,এখনও তিনি সেই স্বপ্ন আগলে রেখেই কাজ করে যাচ্ছেন।
১৯৮৮ সালে কবি নির্মলেন্দু গুনকে লেখা শেখ হাসিনার একটি চিঠি তাঁর সেই স্বপ্নের কথা বলে।কবি গুণ তখন জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্রে কাজ করতেন। *সেই চিঠিতেই শেখ হাসিনা তাঁর *সমাজ বদলের স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করেন।শেখ হাসিনা লেখেন,“ বন্ধুবরেষু গুণ, আপনার অনুরোধে কিছু ছবি পাঠালাম। তবে আমার একটা অনুরোধ রাখবেন।‘ত্রাণ বিতরণ করছি’ এ ধরণের কোন ছবি ছাববেননা। মানুষের দুর্দশার ছবি যত পারেন ছাপেন। আমার ধারণা ত্রাণ বিতরণের ছবি টেলিভিশনে ও খবরের কাগজে দেখে দেখে মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছে।….
ওরা গরিব। সেটা কি ওদের অপরাধ? একটা শ্রেণী যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ আহরণ না করতো তাহলে এরা কি গরিব হ’ত? কার ধন কাকে বিলাচ্ছে? যা কিছু আছে তা সকলে মিলে ভোগ করলে একের কাছে অপরের হাত পাতার প্রয়োজন হ’ত না। ওদেরই সম্পদ লুট করে সম্পদশালী হয়ে আবার ওদেরই দুর্দশার সুযোগ নিয়ে সাহায্য দানের নামে ওদের হাতে ছিটেফোটা তুলে দিয়ে ছবি ছাপিয়ে ব্যক্তিগত ইমেজ অথবা প্রতিষ্ঠা লাভের প্রয়াস আমি মানসিকভাবে কিছুতেই মেনে নিতে পারিনা। আমার বিবেকে বাধে।…..
ক্ষমতার দাপটে কেড়ে নেওয়া ওদেরেই সম্পদ আবার ওদের পেটের ক্ষুধা দেখিয়ে দেশ বিদেশ থেকে ভিক্ষা এনে ওদের দান করা। এখানে ক্রেডিট নেয়ার সুযোগ কোথায়?…এটা লজ্জার ব্যাপার। গর্ব করার ব্যাপার মোটেই না। *গর্ব করার মত কাজ হ’ত যদি এই *সমাজটাকে ভেঙ্গে নতুন সমাজ গড়া যেত*। গর্ব করার মত হ’ত যদি একখানা কাঙালের হাতও সাহায্যের জন্যে বাড়িয়ে না দিত। ফুটপাতে কঙ্কালসার দেহ নিয়ে ভিক্ষের হাত না বাড়াতো।সেটাই গর্ব করার মত হ’ত।
যে স্বপ্ন আমার বাবা দেখেছিলেন সে দিন কবে আসবে?”
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন গুড়িয়ে দিয়েছে ব্যারিস্টার মঈনুল -মুশতাক -জিয়া গং ও তাদের প্রতিপালক গডফাদার। এখন সে কী চায়? কী তার বাসনা? নতুন কোন ষড়যন্ত্র ?
(ফুট নোট:তলায় জাল পরা বাসন্তির ছবি।মঈনুল হোসেনের সম্পাদনায় ইত্তেফাক ছেপেছিল। স্টাফ ফটোগ্রাফার আফতব আহমদ তুলেছিল সেই বানোয়াট ছবি।স্টাফ রিপোর্টার শফিকুল ইসলাম লিখেছিল সেই ভূয়া খবর। পাপের বোঝা নিয়ে মঈনুল এখনও তড়পাচ্ছে ২. চোদ্দ গ্রামের এমএনএ জহিরুল কাইয়ুম (বাচ্চু মিয়া) সে সময় আওয়ামি লীগের মধ্যে সব চেয়ে ধনীব্যক্তিদের একজন ছিলেন।মুশতাকের দূত হিসাবে তিনিই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন।)
লেখক: সাংবাদিক ও কলাম লেখক