আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হতে চলেছে। ভূমিপূজা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। কিন্তু মোদি ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে গেলে তা দেশের ধর্মনিরপেক্ষতাকে আঘাত দেবে বলেই মনে করেন অল ইন্ডিয়া মজলিস ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)-এর প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দেশকে জানানো উচিত, তিনি সেখানে ব্যক্তি হিসেবে যাচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। তিনি যদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যান তাহলে তা দেশের সংবিধানের মূলভিত্তি, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ রক্ষা করার শর্ত ভঙ্গ করে।’ তাঁর মতে, প্রধানমন্ত্রী দেশের সব সম্প্রদায় এমনকি নাস্তিকদেরও প্রতিনিধি।
ওয়াইসি বলেন, ‘আমরা ভুলতে পারি না যে অযোধ্যাতে ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাবরী মসজিদ ছিল এবং ১৯৯২ সালে অপরাধী জনতা তাকে ধ্বংস করেছিল।’
আজ (মঙ্গলবার) হিন্দি দৈনিক ‘জনসত্তা’ জানিয়েছে, ওয়াইসি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বাবরী মসজিদ ছিল এবং তা সবসময় মসজিদই থাকবে। আমরা নয়া প্রজন্মকে বলব আমাদের মসজিদকে ধ্বংস করা হয়েছিল।’
তিনি বলেন, এটা আমার বিশ্বাস। এ থেকে আমাকে বা অন্য কারও কাছ থেকে কেউ নিতে পারবে না। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর কী বাবরী মসজিদ ধ্বংস করা হয়নি?
ওয়াইসি বলেন, ‘ইতিহাস স্মরণ রাখবে যে ১৯৪৯ সালের ২২/২৩ ডিসেম্বর মধ্য রাতে কী হয়েছিল যখন মসজিদের মধ্যে প্রতিমা রেখে দেওয়া হয়েছিল। এরপরে ১৯৯২ সালে সেটি ধ্বংস করা হয়।’
উল্লেখ্য ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রকাশ্য দিবালোকে হিন্দুত্ববাদী উগ্র বিজেপি নেতাদের প্ররোচনায় অযোধ্যার কয়েক শ’ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ‘করসেবক’ নামধারী উগ্রধর্মান্ধরা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। তাঁদের দাবি, এটি ভগবান রামের জন্মস্থান।
দীর্ঘকাল ধরে আদালতে মামলা চলার পরে গতবছর নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট একটি ট্রাস্ট গঠন করতে বলে এবং ট্রাস্টের মাধ্যমে বিতর্কিত ওই জমিতে রাম মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেয়। এ ব্যাপারে আদালতে মুসলিমদের দাবি খারিজ হয়ে যায়। এরপরেই বহুলালোচিত রাম মন্দির নির্মাণের পথ প্রশস্ত হয়। সুপ্রিম কোর্ট অন্যত্র মসজিদ নির্মাণের জন্য জমি দেওয়ার কথা বললেও সেই বিষয়ে বিশেষ অগ্রগতি হয়নি এবং মুসলিমরাও অন্যত্র মসজিদ তৈরির বিষয়ে আগ্রহ দেখায়নি।
সুত্রঃ পার্সটুডে, আনন্দবাজার পত্রিকা