কবি খোরশেদ আলম বিপ্লব
অতীতের সকল গ্লানি জলাঞ্জলি দিয়ে
তুমি এলেহে বৈশাখ,
তুমি এলে যৌবনা দীপ্ত নব রূপে
সহস্র জরাজীর্ণ তাকে পেছনে ফেলে।
হে বৈশাখ,
তুমি এলে এক পশলা বৃষ্টি নিয়ে
চৌচির হওয়া কাঠফাটা মাঠে,
ভিজিয়ে দিয়ে সবুজ প্রকৃতি
আর ফসলি রূপ বদলে দিতে।
হে বেদনা হত বৈশাখ,
বাজারে জিনিসের দাম আকাশচুম্বী
সে তো সাধারণের নাগালের বাহিরে,
প্রতিদিন প্রতিক্ষণ শ্রম মানুষের মনে
বেদনা হত হাহাকার তৃষ্ণার্ত কেবলি।
হে সাজোয়া বৈশাখ,
প্রতিনিয়ত তনুরা আজ নির্যাতিতা
শিশু ও নারী পাচার, এসিড দগ্ধ যুবতী,
নির্বাক মা, ভগ্নি ভ্রাতা, হত ভম্ব পিতা
দেখে খণ্ড বিভৎস দেহের লাশ।
হে নব বৈশাখ,
এসব আর কত কাল দেখবো বলো?
ধর্ষিতা পাগলিটা, বাদ যায়নি অবুঝ শিশুও
যে কিনা হাঁটিহাঁটি পা পা করে
গড়তো আগামী স্বপ্নের স্বপ্নীল পৃথিবী।
হে স্বপ্নীল বৈশাখ,
বিচার হচ্ছে প্রতিদিন সর্বত্র
মহৎ উদ্দ্যোগে গড়া বিচার ট্রাইব্যুনালে
হচ্ছে দণ্ড হচ্ছেও আদেশ ফাঁসির
তাতে কি থেমেছে সন্ত্রাস, হত্যা আর চাঁদাবাজি?
হে কালজয়ী বৈশাখ,
তবুও কি ভরেছে সন্তানহারা
হাজারো মায়ের তৃষিত বুক,
তবু কি স্বামী হারা রমণীর মুখে
মিলেছে এক ঝিলিক হাসি?
হে প্রতিক্ষীত বৈশাখ,
তবুও কি ফিরেছে লাবণ্যতা
এসিড দগ্ধ সেই ভাগ্য বঞ্চিত ললনার,
তবুও কি ললাটের কলঙ্ক গিয়েছে মুছে
ধর্ষিতা ঐ চির অবলার?
হে কালের বৈশাখ,
না! আর কোন কিছুই হয়নি দেখা
আর কোন ক্ষণে, কোন কালে হবেও না,
আসবেও না ন্যায্য অধিকারের সুবার্তা
তাদের এই নিস্ফল প্রতিদানে।
হে রুদ্র বৈশাখ,
তুমি কি পারো না নব বজ্রাগমনে
তছনছ করে দিতে সমস্ত প্রকৃতি?
যা ছিল ঘনকালো আঁধার আর
অপ্রত্যাশিত জঞ্জালে নিমজ্জিত।
হে তারুণ্যের বৈশাখ,
তুমি কি পারো না ভেঙে দিতে
সন্ত্রাসী আর ছত্রছায়ার কালো হাত?
পারো কি তুমি টেনে হেঁচড়ে উন্মোচন করে দিতে
দিবা লোকে যে কালো বাজারী প্রতিনিয়ত অন্তরালে?
হে রণ বৈশাখ,
তুমি কি পারো না যৌতুক প্রথা আর
নেশা নামের ভয়াল এইড্সকে,
সুনামি বলে এধরণী থেকে
আজন্ম নিশ্চিহ্ন করে দিতে?
হে প্রত্যয়ী বৈশাখ,
তুমি কি পারো না সকল নৈরাজ্য
আর অহমিকাকে ঝাটিয়ে বিদায় করে,
আগত প্রজন্মের জন্য এই সমাজে
একটি সুশীল সুনিবিড় বসতি গড়তে?
হে কাঙ্খিত বৈশাখ,
এসো আজ প্রলংকরী রূপে বিক্ষুব্ধ মায়াজালে
বদলে দাও সমাজের সব কুৎসিত অনিয়ম,
গড়ে দাও স্বপ্নের কাঙ্খিত চারণভূমি
লক্ষ প্রাণে চাওয়া সোনার বাংলাদেশ।