সাইফুল ইসলাম তানভীর
আমরা অনেকেই মনে করছি এদেশে নারীদের অনেক অনেক উন্নয়ন ঘটেছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। এখনো প্রতিনিয়ত নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। ধর্ষণতো দেশের খুব সাধারণ ঘটনা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন কর্পোরেট অফিসগুলোতে অনেক উচ্চ শিক্ষিত নারী কর্মকর্তাদেরকেও যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। একটি মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানিতে কিভাবে নারী সুন্দরী অফিসারদের যৌন হয়রানী করা হয় সেটা নিয়ে দৈনিক ইত্তেফাক গত বছর ধারাবাহিক ভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। বিভিন্ন জরিপে দেখা যায় দেশে নারীর সংখ্যা পুরুষের চেয়ে কিছু সংখ্যক বেশি। নারীদের শিক্ষার হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু নারীরা সেই তুলনায় ভালো পদের চাকরিতে অনেক পিছিয়ে। পেশাগত অনেক কাজের দক্ষ নারীদের সংখ্যাও খুব কম। যেমন এখন পর্যন্ত সরকারী বে সরকারী বহু হসপিটালে গাইনি ডাক্তার পুরুষ। পুরুষরাই নারীদের গাইনি অপারেশন করছে। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, কার্ডিয়াক বিশেষজ্ঞ, নিউরোসায়েন্স বিশেষজ্ঞ, ভাস্কুলার বিশেষজ্ঞ, নাক, কান, গলা, অর্থপেডিক্স ইত্যাদি বিষয়ের নারী চিকিৎসক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। খুব কম সংখ্যক নারী ভালো ডাক্তার হতে পেরেছে। আইনজীবী হিসেবেও খুব খ্যাতিমান আইনজীবী নারীদের মধ্যে দেখা যায় না। এখন পর্যন্ত নারীদের জন্য স্বতন্ত্র একটি ইউনিভার্সিটি তৈরি হয়নি। হা। কিছু পরিসংখ্যানে চমৎকার কিছু বিষয় দেখানো যাবে ! সেখানে দেখানো যাবে -দেখ কোন দেশে নারীদের এত বড় উন্নতি ঘটেছে? যেমন আমাদের দেশের প্রধান নির্বাহীর পদে বহু বছর ধরে দুজন নারী আছেন। অর্থাৎ দুজন নারী অনেক বছর ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। স্পীকার পর্যন্ত নারী। ব্রিটিশ কালচারের সিস্টেমে ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্সি অনুযায়ী বাংলাদেশে স্পীকার পদটির সিরিয়াল তিন নম্বর। স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, কৃষি, তার বেতার, শিক্ষা সংস্থাপনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদের মন্ত্রী হয়েছেন। সচিব হয়েছেন। বিচারপতি হয়েছেন। পি এস সির চেয়ারম্যান হয়েছেন। সেনা,পুলিশ কর্মকর্তা হয়েছেন। ইউনিভার্সিটির ভিসি হয়েছেন। প্রধান বিরোধী দলীয় নেত্রী হয়েছেন। দ্বিতীয় ক্ষমতাধর নেত্রী হয়েছেন। এত কিছু নারীগণ হয়েছেন। তাহলে কেন নারী নির্যাতন এত ব্যাপক ভাবে চলছে? এই আধুনিক যুগেও দেশের প্রায় সব জায়গায় যৌতুক চলছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে এটা সাংঘাতিক পর্যায়ে। পাত্রী অনার্স, মাস্টার্স পাশ। সুন্দরী। তাতেও কাজ হচ্ছে না ! যৌতুক লাগবেই। উত্তরাঞ্চলে এটা খুব স্বাভাবিক কালচার। ইসলামে যৌতুক নিষিদ্ধ। হারাম। সরকারের আইনেও নিষিদ্ধ। তাহলে কেন এই আধুনিক যুগেও এত যৌতুকের প্রভাব?