নীল কাব্য (শিউলী)
প্রথম যেদিন কান্নার আওয়াজ দিয়ে জানিয়েছিলাম,
আমার আগমন বার্তা।
সেদিন হয়তো আমার মা-বাবা ও খুশি হয়নি,
বেঁজে ওঠেনি আনন্দের ঝংকার।
সেতারের করুণ মূর্ছনায় যেন হয়েছিল স্বাগতম !
কার একটাই আমি যে মেয়ে।
শৈশব পেরিয়ে কৈশরে পা রাখতেই,
মায়ের আদেশ এটা করোনা-ওটা করোনা
আরো হাজারো বিধি-নিষেধ।
কারণ একটাই আমি যে মেয়ে।
কৈশর পার হয়ে যৌবনের পর্দাপণে,
নিজেই নিজের সৌন্দর্যে অভিভূত হলাম।
এক অন্যরকম ভাল লাগার শিহরন অনুভূত হল সর্বাগ্রে!
মনের এক কোণে শুধু এক জনকেই বন্দী রাখার আকুতি,
এই কি ভালবাসা ?
এক সময় বধূ বেশে এলাম নুতন
ভূবণে একরাশ নূতন স্বপ্ন নিয়ে।
কিন্তু হায়!
বিধি বাম নিজ ভাল লাগা-মন্দ লাগা
হাসি-আনন্দ-কান্না সব এক নিমিষে,
ডাষ্টবিনে ফেলে দিয়ে আপন করতে হয়েছে,
সেক্রিফাইস আর কম্প্রোমাইজ কে।
তারপর ও পাইনি, আমার নিজের ঘর।
ছেড়েছি বাবার ঘর,
পেলাম বরের ঘর আমি ছাড়া না-কি অসম্পূর্ন একটি ঘর।
অথচ আমার নেই নিজস্ব আশ্রয়।
পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে,
পুরুষরাই করছে রাজত্ব।
যে নারী পরম মমতায়-সাজায়
সংসার-বাগান পরিশেষে সে কি পায় ?
লাঞ্ছনা অবহেলা আর মিথ্যে ভালবাসা,
দিবানিশি অপমান!
আমি-ই ধারণ করি,
নতুন প্রজন্মের নতুন সমাজের নতুন পৃথিবীর।
তবে আমি কেন ?
অবহেলিত এই ধরনীতে?
অসম্পূর্ন আমি, পূর্ন করি এই পৃথিবী কে।